আলাল দীর্ঘদিন ধরে তার পুকুরে মাছ চাষ করলেও মাছ চাষ সম্পর্কে কোন প্রশিক্ষণ পাননি। এ বছর তিনি তার পুকুরে রুই মাছ চাষ করেন। পোনা মজুদের সপ্তাহখানেক পর তিনি তার পুকুরে কিছু মাছের ফুলকায় রক্তক্ষরণ, ফুলকা পচা ও ফুলে যাওয়া লক্ষণ লক্ষ করেন। এমন সমস্যায় তিনি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নিলে কর্মকর্তা আলালকে এ রোগের কারণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য জৈবিক ও রাসায়নিক ব্যবস্থা বলে দেন। এ ব্যবস্থা নেওয়াতে রোগটি অন্য পুকুরে আর ছড়ায়নি।
যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনাব আফজাল ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে একটি দুগ্ধ খামার করেন এবং সঙ্কর জাতের পাঁচটি দুগ্ধবতী গাভি ক্রয় করে পালন শুরু করেন। প্রতিটি গাভি দৈনিক গড়ে ২০ লিটার করে দুধ দেয়। গাভিগুলোকে প্রতিদিন সুষম খাদ্য খাওয়ানো ও প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করেন। জনাব আফজালের সংসার বর্তমানে সচ্ছলভাবে চলছে। পরবর্তীতে তিনি খামারে দেশি বকনা ক্ৰয় করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে খামার বড় করার সিদ্ধান্ত নেন
দিনাজপুর জেলার সুন্দর বন গ্রামের আকতার একজন সচ্ছল কৃষক। তার বিভিন্ন ধরনের কাঠের ও ফলের বাগান রয়েছে। তিনি কাঠের গাছ পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পূর্বে ছাটাই করেন এবং ফলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রতি বছর সংগ্রহের পর গাছের পাতা ও রোগাক্রান্ত ডাল ছাটাই করেন। এর ফলে তার গাছের ফুল, ফল ধারণ ও ফলের গুণগত মান বৃদ্ধি পায় ।
কুমিগ্রামের উলিপুর গ্রামের কৃষকদের আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়। আবার সঠিকভাবে কৃষি পণ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণেও অসুবিধা হয়। কৃষি কর্মকর্তার কাছে পরামর্শের জন্য গেলে তিনি কৃষকদের নিয়ে এক ধরনের গণতান্ত্রিকভাবে সমিতি গঠনের পরামর্শ দেন এবং এই সমিতির আইনের বিষয়টিও বুঝিয়ে বলেন ।
সাধন একজন ব্যবসায়ী। কুয়াকাটা বেড়াতে গিয়ে সে দেখতে পেল ঐ এলাকায় কিছু মাছ বাঁশের মাচায় ঝুলানো। এ বিষয়ে সাধন ঐ এলাকাবাসীর নিকট জানতে চাইল। এলাকাবাসী তাকে জানাল বহুদিন ধরে তারা এভাবে মৎস্য সংরক্ষণ করে আসছে। সাধন বিষয়টি আগ্রহের সাথে জেনে নিল । সাধন এলাকায় ফিরে এল। পরবর্তী বছর তার মৎস্য খামারের ছোট-বড় মাছ বিক্রয়ের পর কিছু মাছ অবিক্রীত রইল ।। এ সময় তার গত বছর কুয়াকাটায় দেখা মাছ সংরক্ষণের কথা মনে পড়ল এবং অবিক্রীত মাছগুলো উক্ত পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে আর্থিকভাবে উপকৃত হলো। সাধন ভাবল এভাবে মাছ সংরক্ষণ সহজ ও লাভজনক।
এহসান একজন মৎস্যচাষী। তিনি নিজের পুকুরে মাছ চাষ করেন। তিনি নিয়মিত মাছের পরিচর্যার দিকে খেয়াল করেন। হঠাৎ একদিন দেখলেন, কিছু মাছের পেট অস্বাভাবিকভাবে ফুলে উঠেছে এবং দীর্ঘ সময় ধরে ভেসে থাকছে। বিষয়টি দেখে তিনি চিন্তায় পড়ে গেলেন। আক্রান্ত একটি মাছ নমুনা হিসেবে উপজেলা মৎস্য অফিসে নিয়ে গেলেন। মৎস্য কর্মকর্তা মাছের পেটে চাপ দিয়ে তরল জাতীয় পদার্থ বের করাসহ আরও কিছু পরামর্শ দিলেন।
আইডি বাবার সাথে একটি ফার্মে গেল। সেখানে চড়ুই জাতীয় একটি পাখি দেখল যা পোল্ট্রির অন্তর্ভুক্ত। আমাদের দেশে বর্তমানে এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। কারণ এর মাংস সুস্বাদু, অল্প জায়গায় পালন করা যায়। এ ধরনের পাখি পালনের জন্য প্লাস্টিকের খাঁচা উত্তম। পাখিটি আইভির খুব পছন্দ হলো। সে এধরনের পাখি বাড়িতে পালন করতে বাবাকে অনুরোধ করল।
সালমা বেগম বাড়ি বাড়ি ঘুরে গরুর দুধ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে সংসারের যাবতীয় খরচ নির্বাহ করে থাকেন। গত সপ্তাহে ভাসমান ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় তার পাত্রের দুধে পশুর লোমসহ পানি মেশানো আলামত পাওয়া গেল। ভ্রাম্যমান ভেজাল বিরোধীরা মনে করে দুধের মধ্যে এসবের মিশ্রণ থাকা ভালো নয় । এগুলো ছোট একটি যন্ত্রের সাহায্যে সহজেই নির্ণয় করা যায়।
কৃষি শিক্ষক রনি মাঠে ছাত্রছাত্রীদের বনজবৃক্ষের চারা রোপণের উদ্দেশ্যে প্রথম ধাপে নির্দিষ্ট মাপে মাটি সরানো এবং দ্বিতীয় ধাপের কাজটিও সম্পাদন করে দেখালেন। ছাত্রী ঝুমুর উক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে তার বাড়িতে প্রথমে একটি চারা রোপণ করে বাঁচাতে পারল না। কৃষি শিক্ষক তাকে চারা রোপণের সময় ধাপে ধাপে কাজের ত্রুটিগুলো সংশোধন করে দিলেন। পরবর্তীতে সেই মোতাবেক ঝুমুর গাছের চারা রোপণ করে বাঁচাতে সক্ষম হলো।
স্বপন একজন ক্ষুদ্র চাষি। তার মাত্র চার খন্ড চাষের জমি আছে। তিনি বহুদিন যাবৎ উক্ত জমিতে ধান ও পাটের চাষ করে আসছেন। তার ঐ সব জমিতে এখন আর আগের মতো ফসল হয় না। তিনি চিন্তিত হয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে গেলে তিনি তাকে শুধুমাত্র ধান-পাট চাষ না করে ২-৪ বছর ব্যাপী বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষের পরামর্শ দিলেন। এক্ষেত্রে ফসল চাষে তিনি গভীর ও অগভীরমূলী ফসল বিবেচনাসহ জমিকে বিশ্রাম দেওয়ার দরকার এ মর্মে পরামর্শ দিলেন।
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোল্ট্রি শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশে ছোট বড় অসংখ্য পোল্ট্রি খামার গড়ে উঠেছে। কিন্তু মুরগির বাচ্চার দাম বৃদ্ধিসহ অন্যান্য বিষয় অপ্রতুল হওয়ায় এ শিল্প বিকাশে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সরকারের সহযোগিতা পেলে শিল্পটি দ্রুত অগ্রসর হতে পারে।
যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিজয়া স্থানীয় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি দুগ্ধ খামার স্থাপন করল। তিনি খামারের জন্য দুগ্ধবতী গাভি নির্বাচন করার সময় গাভির পিছনের পা ও ওলানের আকার আকৃতি দেখে নিল যার কারণে খামারের দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পেল এবং সে আর্থিকভাবে লাভবান হলো। এক সময় চিত্র-২ তার এলাকার কিছু লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হলো
শিমুলের দাদু বন বিভাগের কর্মচারী ছিলেন। অবসর জীবনে তিনি রাঙ্গামাটি জেলায় বসবাস করেন। তার একমাত্র নাতী শিমুলের এসএসসি পরীক্ষার পর তাকে নিয়ে সুন্দরবন বেড়াতে এসেছেন। শিমুল তার এলাকার শীল কড়াই গাছের সাথে পরিচিত ছিল। এখানে সে সুন্দরি গাছসহ অনেক অপরিচিত গাছপালা ও পশুপাখি দেখে মুগ্ধ হলো। দাদু বললেন, তার ছোটবেলায় দেখা বনের গাছপালা ও পশুপাখি এখন আর তেমন একটা চোখে পড়ে না। কারণ মানুষ আজকাল নির্বিচারে গাছপালা কাটছে।
লাবু কৃষি বিষয়ক মাসিক পত্রিকা “কৃষি কথা"-র সদস্য। এই পত্রিকার একটি প্রতিবেদন পড়ে জানতে পারে যে, বর্ষা মৌসুমে বিশেষ এক ধরনের মাঠ ফসল ও মাছের সমন্বিত চাষ করা যায়। যেসব জমিতে পানির স্থায়িত্ব ৩-৪ মাস এবং পানির গভীরতা ১০-১২ সেমি হয়, সেসব জমিতে এই ফসল ও মাছের সমন্বিত চাষ করা যায়। সে মৎস্য কর্মকর্তার কাছ থেকে জমি তৈরি ও কয়েকটি ব্যবস্থাপনার পরামর্শ গ্রহণ করে বেশ লাভবান হয়।
মনি তার এক একর জমির পুকুরে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি হাঁসের খামার গড়ে তোলে। কিছুদিন পর দেখল যে, ২/১টি হাঁসের নাক মুখ দিয়ে তরল পদার্থ বের হচ্ছে এবং হাঁসগুলো আলো দেখে ভয় পাচ্ছে। সে দ্রুত স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্ৰহণ করে। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তার খামারে আদর্শ প্রতিপালন পদ্ধতি অনুসরণ করতে বলেন
মামুন ডেইরি ফার্ম করে আত্মকর্মসংস্থানের প্রত্যয় ব্যক্ত করে। সে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শে সংকর জাতের গাভি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এই জাতের গাভির বর্ণ ছোট বড় সাদাকালো রঙে মেশানো। ভালই চলছিল মামুনের ডেইরি ফার্ম। কিন্তু কিছুদিন পর তার খামারের গরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তার খামার পরিদর্শনকালে দেখেন যে, খামারটি বাঁশ ঝাড়ের পাশে স্যাঁত স্যাঁতে স্থানে এবং তাতে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাব। তিনি খামারের জন্য উপযুক্ত স্থানের পরামর্শ দেন।
শৈলেন সিরাজগঞ্জের একজন সমৃদ্ধ কৃষিজীবী। বাড়িতে ছোটখাটো একটি গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। প্রতি বছর বন্যায় গবাদিপশুর খাদ্যের তীব্র সংকট হয়। তাছাড়া বন্যার সময় তার গরুগুলোর দেহের তাপমাত্রা অত্যাধিক বেড়ে যায় এবং শরীর কাঁপতে থাকে। এ বছর তিনি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে তার খামারের গবাদিপশুর সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শে তার বাড়ির পাশের জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করেন এবং বিশেষ প্রক্রিয়ায় বন্যার পূর্বেই তিনি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন । এই সব পরামর্শে তিনি বিশেষভাবে উপকৃত হন ।
তানভীর সিদ্দিকী একজন বৃক্ষপ্রেমী। তিনি তার এলাকায় প্রায় ২০০ জন লোক নিয়ে ১০টি দলে বিভক্ত হয়ে রাস্তার দুইধারে শিশু, মেহগনি, দেবদারু, তাল, পাম ইত্যাদি বৃক্ষ রোপণ করেন এবং যত্ন নিয়ে বড় করেন। দলগুলোর নিয়মিত পরিদর্শন, পর্যবেক্ষণের কারণে রাস্তার দু'পাশে বেড়ে ওঠা গাছগুলোর নান্দনিক সৌন্দর্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তানভীর সিদ্দিকীর এই মহৎ উদ্যোগের কারণে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারর এ বছর তাকে পুরস্কৃত করেছে।
মেধাবী ছাত্র মানিক লাল শেরে-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে। মানিক লাল তার এলাকার প্রান্তিক চাষিদের নিয়ে একটি “কৃষি উন্নয়ন সংঘ” গড়ে তোলে, যেখানে “সকলেই সকলের তরে, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে" এর ভিত্তিতে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে কাজ করবে। মানিক লালের এ উদ্যোগটি গ্রহণের পর ঐ বছরটি তারা বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ভালো ফসল উৎপাদনে সক্ষম হয়।
লাবনী কৃষি শিক্ষা বিষয় নিয়ে এইচএসসি পাস করেছে। তার বাবার হঠাৎ হওয়ায় পড়ানোর পাশাপাশি দ্রুত অর্থ উপার্জনের জন্য কৃষি শিক্ষকের নিকট পরামর্শ চাইলে তিনি এক ধরনের সবজি জাতীয় ছত্রাক চাষের কথা বলে মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং অত্যন্ত পুষ্টিকর। লাবনী শিক্ষকের পরামর্শ মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে দ্রুত অর্থ উপার্জন শুরু করলো। এতে এলাকার অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হলো।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় প্রতিটি জেলায় কম বেশি কুলের চাষ হয়। এত প্রচুর পরিমাণে খনিজ এবং ভিটামিন এ ও সি আছে। কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশি টক জাতীয় কুলের গাছ থেকে অতি সহজেই ভালো জাতের কুল পাওয়া যায়। বর্তমানে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে কুল ভান করে লাভবান হচ্ছে এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
রনক একজন শিক্ষিত বেকার যুবক। তিনি যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে মাছ চাষের উপর প্রশিক্ষণ নিলেন। তিনি তার নিজের পুকুরে মাছ চাষ শুরু করলেন। তিনি পুকুরে সার, চুন সবকিছু দিলেন কিন্তু বাড়তি কোনো খাবার দিলেন না। তাই তিনি কাঙ্ক্ষিত ফললাভে ব্যর্থ হন। পরবর্তী সময়ে মাছ চাষের ধাপগুলো সুচারুরূপে সম্পন্ন করেন। তিনি পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্যের উপস্থিতি পরীক্ষা করলেন এবং বাড়তি খাবার প্রয়োগ করলেন। এবারে তিনি মাছ চাষে সফলকাম হলেন।
ফারজানা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ পশুপালন অনুষদ থেকে পাশ করে বাণিজ্যিকভাবে মুরগির বাচ্চা উৎপাদন খামার তৈরি করে স্বাবলম্বী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। এ মর্মে তিনি মুরগির ডিম ফোটানোর ঘর তৈরি করে বৈদ্যুতিক ইনকিউবেটর কিনে আনলেন। বাচ্চা ফুটানোর ডিমগুলো তিনি নিজে বাছাই করে তা বৈদ্যুতিক ইনকিউবেটরে সঠিকভাবে স্থাপন করলেন। পরের কাজগুলো তিনি সূক্ষ্মভাবে করলেন। ফলস্বরূপ তিনি সর্বোচ্চ সংখ্যক বাচ্চা পেলেন ।
কবির সাহেবের ৫০০ মুরগির একটি লেয়ার ফার্ম আছে। একদিন সকালে তিনি লক্ষ্য করলেন কিছু মুরগি ঘরের কোণায় ঝিমুচ্ছে। মুরগির মল সাদা চুনের মত ও তাতে সবুজ-হলুদ মিশ্রণ। পাখা, ঘাড় ও পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। এ সমস্যা সমাধানে একজন পশু চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে তিনি বললেন যে, তার খামার মারাত্মক রোগে আক্রান্ত। রোগ নিরাময়ের জন্য প্রতিকার ও প্রতিরোধের জন্য যা করণীয় তা তিনি বুঝিয়ে দিলেন।
আবুল কালাম পাঁচ বছর পূর্বে তিনটি গরু নিয়ে ক্ষুদ্র খামার শুরু করেন। ধীরে ধীরে গরুর সংখ্যা বাড়তে বাড়তে তার খামারে গরুর সংখ্যা প্রায় পাঁচশত। কিছুদিন পূর্ব থেকে তার খামারের ১০টি গরুর মুখে, জিহ্বায় ও ক্ষুরে ঘা হয়। পশু খুড়িয়ে হাঁটে ও শক্ত কিছু খেতে পারে না। আবুল কালাম পশু সম্পদ কর্মকর্তার নিকট গেলে তিনি তাকে সঠিক পরামর্শ দেন।
আবুল হোসেন একজন নিঃস্বার্থ বৃক্ষ প্রেমিক। পেশায় তিনি ছিলেন একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক আর নেশা ছিল নিজ হাতে খালি জায়গায় বৃক্ষ রোপণ করা। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে তালের বীজ সংগ্রহ করে সেই বীজ তার গ্রামের রাস্তার দুই ধারে রোপণ করতেন। তার লাগানো তালগাছগুলো অনেক বড় হয়েছে। এই গাছগুলো গ্রামের সৌন্দর্য অনেক বৃদ্ধি করেছে এবং গ্রামবাসী অনেক সুফল পাচ্ছে। মিডিয়াতে তার নাম ডাক প্রচার হয়েছে কিন্তু তিনি কিছুই জানেন না। কারণ আজ তিনি বেঁচে নেই, বেঁচে আছে তার রোপণ করা গাছপালা ও সম্মান।